বাস্তব জীবনে সত্যিঘটনা
আমি যে ঘটনাটি আজ আপনাদের কে বলবো সেটা আমার চাচাতো ভাইয়ের সাথে ঘটা। পেশায় সে একজন মসজিদের মোয়াজ্জেম।
আমার চাচাতো ভাইয়ের নাম ইমরান। তিনি থাকেন আমাদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের সদরপুরে।ছেলে বেলা থেকেই আমার সেই চাচাতো ভাইটি ভৌতিক ব্যাপার গুলোতে খুব একটা বিশ্বাস করতেন না। ছিলেন সাহসী স্বভাবের। কিন্তুু একটা ঘটনা তার সমস্ত জীবনকে ওলট পালট করে দিল।
সময়টা ২০০৯ সালের জুন অথবা জুলাই মাস। রাত ৯টা অন্য যে কোন একটা সাধারণ রাতের মতোই সেদিন রাতে ঘুমোতে যাচ্ছিলেন তিনি। আপনারা হয়তো জানেন গ্রামে ৯টা মানে অনেক রাত। শুয়ে পড়ার পর কিছুটা ঘুম ঘুম এসে যায় চোখে। কিন্তুু হঠাৎই দরজা কে যেন নক করলো বেশ জোরে ধাক্কা দিলো।তিনি ভাবলেন এতো রাতে কে।
দরজা খুলে দেখলেন তারই পরিচিত একজন লোক দাড়িয়ে আছে। ঠান্ডা গলায় সেই লোকটি বললো যে গ্রামে কেউ একজন মারা গিয়েছেন। আজ রাতেই সেই মৃত ব্যক্তির দাফনের কাজ করতে হবে। কিছুটা বিরক্ত হয়েই তিনি রওনা দিলেন।
সেই লোকটির সাথে। ঘটনা স্থলে পৌছে দেখলেন লাশটার অবস্থা খুবই বীভৎস বললেও কম হবে চেহারাটা শুধু কোন রকমে বোঝা যাচ্ছিল। জানা যায় ট্রাক চাপা খেয়ে মারা গেছে। সাধারণত কোন বাড়িতে কেউ মারা গেলে পরিবারের লোকজন বেশ কান্না কাটি করে তাছাড়া অনেক মানুষ এসে ভিড় করেন।
কিন্তুু সেখানে তেমনটা দেখা গেল না। প্রথমে খটকা লাগলেও ব্যাপারটা খুব আমলে নিলেন না।। তিনি ভাবলেন অনেক রাত হয়েছে বলে হয়তো। লাশ আগে থেকেই গোসল করানো ছিল এবং খাটিয়াটা তৈরি ছিল। সুতরাং তিনি ঘটনা স্থলে গেলে লাশ কাঁধে তোলা হয়।
খাটের সামনের অংশটা তিনি ধরেন। স্থানীয় কবর স্থানের নাম গোয়ালখালি কবর স্থান নামে পরিচিত। সেখানে যেতে হলে ধান খেতের মাঝখান দিয়ে হেটে যেতে হয়। সে সময় যে সময়টার কথা বলছি তখন বৃষ্টির সময় ছিল। ক্ষেত গুলো পানিতে ভরা ছিল।কোথাও হাঁটু পানি,কোথাও কোমর সমান পানি।।
সেখানে দিনের বেলাতেই লাশ নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্ট সাধ্য ব্যাপার। রাতে ব্যাপারটা কঠিন হয়ে পড়লো। চার দিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার, হারিকেনের আলোতে কিছু দেখা যাচ্ছিলো না। লাশ নিয়ে ওনাদের বেশ কষ্টই হচ্ছিলো।
লাশ বহনের ধর্মীয় নিয়ম কানুন ছাড়াও এমনিতেই কেউ তেমন একটা কথা বার্তা বলেন না। কিন্তুু আসে পাশের মানুষের নীরবতা তার কাছে মোটেও স্বাভাবিক লাগছিলো না।। জড়োতা কাটানোর জন্য তিনি তার আশে পাশে যারা ছিলেন তাদের সাথে অনেক কথা জিজ্ঞেস করতে লাগলেন।
কিন্তুু আশেপাশের কেউ তেমন একটা তার কথার উত্তর দিলেন না। তাছাড়া সেখানে লোক ছিলো মাত্র ৪ থেকে ৫ জন। উপায় না দেখে তিনি কথা না বলে হাঁটতে থাকলেন। এতো কম লোকের উপস্থিতিটাও তার কাছে কিছুটা অস্বাভাবিক লাগলো
0 Comments